চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইশতিয়াক আহমেদ এবং দাবি পাঠ করেন সুসান কবির।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’দফা সংঘর্ষের ভয়াবহতা এখনো শিক্ষার্থীদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। রাতের ঘটনায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরার মধ্য দিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হলেও এর বিস্তারে প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বশীল ভূমিকার অভাবই ছিল সবচেয়ে বড় কারণ।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, দ্বিতীয় দফায়ও প্রথম উসকানি আসে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেই। সকাল থেকে তারা শিক্ষার্থীদের নাম ধরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে, এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। আগের রাতের মতো দিনের বেলাতেও প্রশাসন দায়িত্বশীল আচরণ দেখাতে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলেই শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়।
এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বহীনতা, অপরাধ এবং উদাসীনতার বিরুদ্ধে অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ সাত দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। তারা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, বিভ্রান্ত না হয়ে অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের ৭ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি পোষণ করুন।
৭দফা দাবি :
১. প্রশাসনের উদ্যোগে আহত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত চিকিৎসা। এছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ।
২. প্রয়োজনে ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ভ্রাম্যমান আবাসনের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. সামাজিক নিরাপত্তার সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া।
৪. হামলায় জড়িত নয় এমন নিরপরাধ এলাকাবাসীকে হয়রানি থেকে বিরত থাকা।
৫. দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনে একটি কার্যকর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা।
৬. সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ।
৭. সর্বোপরি সংঘর্ষের ঘটনার দায় নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে ও একটি যোগ্য প্রক্টরিয়াল বডি নিয়োগ করতে হবে।
এসময় আগামীকালের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করলে এবং ৭ দফা দাবি মেনে না নিলে কঠোরতম কর্মসূচির ঘোষণা দেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের উম্মে সাবাহ তাবাসসুম, লোকপ্রশাসন বিভাগের ইশতিয়াক আহমেদ, আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুসান কবির, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সুসান কবির এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিনসহ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন এবং নারী অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।